Friday, March 17, 2017

বৃষ্টি ভেজা মেঘ লিখেছেনঃ odhora chowdhury meghla (আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন)

বৃষ্টি ভেজা মেঘ
বৃষ্টি ভেজা মেঘ
লিখেছেনঃ odhora chowdhury meghla (আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন)

সকাল সাতটায় টিউশন,ধ্যাত…এটা কোনটাইমিং হলো?মেঘের মেজাজ প্রচন্ড খারাপ|কারন সে কখনোই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠতে পারেনা|ছয়টা পঞ্চাশ বাজে|ফোনে ৪৩টা মিসকল,ঘুমের ঘোরে কেবল চোখ খুলে তাকালসে|নিজের উপর নিজেরি রাগ লাগছে ওর|কেন যে কাল রাতে ফোনটা সাইল্যান্ট মুড করেছিল সে!!

যাব নাকি যাবনার দোটানায় জলদি করে ব্রাশ করে,কলেজ ড্রেস পড়ে তৈরী হয়ে নিল সে|সাতটা দশ বেজে গেছে|ওদিকে আবার টুপটাপ বৃষ্টি|গাধাটার উপর আবার রেগে আছে মেয়েটা|তার গাধা?মানে হচ্ছে শ্রাবন|গত পরশুদিন রাতে শ্রাবনের
ফোন ওয়েটিং ছিল|তাই সর্বশেষ বত্রিশ ঘন্টায় একবারো গাধাটার সাথে কথা বলেনি সে| মনে মনে ভাবে ভাগ্যিস রাতে ফোনটা সাইল্যান্ট মুডে রেখেছিলাম,নাহলে কি রাগটা ধরে রাখতে পারতাম? নাকি ফোনটা রিসিভ না করে থাকতে পারতাম?

ছাতাটা নিয়ে বেড়িয়ে পড়ল সে|অলরেডি দশ মিনিট দেরি হয়ে গেছে| আজ রিক্সা ডেকে নিল … স্যারের বাসায় যেতে আরো দশ মিনিট!সর্বমোট বিশ মিনিট দেরি!| উহু আজোস্যার শুরু করে দিয়েছেন|তবে মন্দের ভাল এই যে সে পৌছুবার পর মুসলধারে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল|তার মানে আজ আর কলেজে যাওয়া হলনা|শ্রাবনের ঠিক সামনের সিটটা ফাকা|অগত্যা সেখানেবসে পড়ল,আর স্যারের কথায় মন দেবার চেষ্টা করল…

ফোনের মেসেজটোনটা বাজছে|এই টিউশনের মাঝে কে মেসেজ দেয়! বিরক্তিমুখে ওপেন করে দেখল একটা ফাকা মেসেজ|গাধাটা আবারো শুরু করে দিয়েছে… রাগ ভাঙ্গানোর চেষ্টা|শ্রাবনের সাথে কোন ভালবাসার সম্পর্ক নেই মেঘের|শুধুমাত্র ভাল বন্ধু|সারাদিন একসাথে টিউশন,কলেজ,ল্যাব ক্লাশ,একসাথে বাসায় যাওয়া পর্যন্ত আর রাতভর মেসেজ চালাচালি-এই পর্যন্তই তাদের সম্পর্ক|মাঝে মাঝে ফোনে কথাও হত___ তবুও দুজন দুজনকে বন্ধুর থেকে বেশি ভাবতে পারেনি|যাই হোক মেসেজটার রিপ্লাইনা দিয়েই ফোনটা রেখেদিল|এরপর দুইটা মিসকল আর তারপর আবারো মেসেজ,“চল বৃষ্টিতে ভিজি|” এবার রিপ্লাইদিল মেঘ|“স্যারের কথায় মনদে, আজকের পড়াটা না বুঝলে পরে ঢং করতে পারবি না|” আবার শ্রাবন মেসেজ দিল,“টিউশন শেষে ভিজবি?” রিপ্লাই দিল,“না কলেজ আছে|”
টিউশন শেষ|সবাই কলেজ যাচ্ছে|শ্রাবন মেঘের হাত ধরেআ টকাল|আর বলল,“আজ তোর কলেজ যাওয়া হবেনা|” আর কলেজে যাওয়া হলনা|তারা দুজনেই রাস্তায় হাটছে|সারাদিন আজ একসাথে বৃষ্টিতে ভিজবে|হঠাত শ্রাবন বলে উঠল,“এই দাড়া বর্ষা আসছে|আমরা তিনজনই ভিজব|বর্ষা চলে এল,মুচকি হেসে বলল,“আমিও আজ কলেজে যাবনা|” শ্রাবন সাইকেলে আর তার দুপাশে দুজন হাটছে|মেঘ শ্রাবন আর বর্ষা তিনজনই কাকভেজা হয়ে আছে |তবুও খুব ভাল লাগছে সবারই…বৃষ্টির টিপ টাপ শব্দে তিনজনের নিশব্দতার ছন্দপতন ঘটিয়ে শ্রাবন বলল,”আমি বর্ষাকে ভালবেসে ফেলেছি|আর বর্ষাও আমাকে……|একটু দেখে বলতো আমাদের কেমন মানাবে?” মেঘ মুচকি হেসে বলল,‘‘ভালই মানাবে|”

বৃষ্টির তীব্রতা বেড়েই চলেছে|সাথে মেঘের মনেরও কষ্টের তীব্রতা সমানুপাতিকহারে বাড়ছে|বর্ষা বলল,“বৃষ্টিটা বোধহয়বেড়েছে|চল চল ঐ ঝাপির নিচে দাড়াই|”এই বলে দৌড়ে ঝাপির নিচে চলে গেল সে|মেঘ আর শ্রাবন এখনো বৃষ্টিতে ভিজছে|তাই শ্রাবন ওরহাতটা টেনে ঝাপির নিচে নিয়ে যাচ্ছে|আর ব্যাটারী চালিত পুতুলের মত মেঘ চলছে শ্রাবনের সাথে|

হ্যাচকা টান দিয়ে হাতটা ছাড়িয়ে নিল মেঘ|কারন শ্রাবন তো আজ বাইরেরবৃষ্টির হাত থেকে তাকে বাচাতে পারবে,তবে অন্তরের বৃষ্টি থেকে কে বাঁচাবে ওকে!! তাই আজ মেঘ একাই বৃষ্টি বিলাস করবে|আজ যে তাকে ভিজতেই হবে|চোখের জল লুকাতেই হবে..........

[গল্পের প্রত্যেকটি চরিত্র কাল্পনিক| এটা আমার লেখা প্রথম গল্প| কোনভুল ত্রুটি পাঠক নিজগুনেমার্জনা করবেন]
এই সময়ে ৮/১৫/২০১৩ ১১:৩৩:০০ PM 

No comments:

Post a Comment