Friday, March 17, 2017

- আরে ফয়সাল নাকি!! কেমন আছিস?

- আরে ফয়সাল নাকি!! কেমন আছিস?
- এই তো দোস্ত, তোর কি খবর?
- আমি তো ভালই আছি। তা এইখানে কি করিস?
- একটা ছেলে দেখা করবে বলল। তাই দাঁড়িয়ে আছি।
- আজকে তোর অফিস ছুটি নাকি?
- না, কয়দিন সকাল করে শরীর খারাপ লাগছিল। তাই ছুটি নিয়েছি।
- ওও, আমার আবার বাজারে যেতে হবে। তো ঠিক আছে দোস্ত, পরে কথা হবে।
- ঠিক আছে দোস্ত

ঠিক ধরেছেন, আমিই ফয়সাল। এই গল্পের নায়ক। এতক্ষণ এক দোস্তের সাথে কথা বলছিলাম। দোস্তকে কয়েকটা মিথ্যা কথা বলেছি। সত্য হচ্ছে, অফিস থেকে কোন ছুটি নেইনি। অফিস চলতেছে। আর আমার সাথে কেউই দেখা করতে চায়নি। বরং আমিই একজনের সাথে দেখা করার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এবং সে ছেলে না। সে হচ্ছে এই গল্পের নায়িকা

ঘটনার শুরু বেশ কয়েকদিন আগে। মেয়েটার নাম জানি না। তবে সে ভার্সিটিতে পড়ে এইটা জানি। আমার চেয়ে দুই-তিন বছরের জুনিয়র ব্যাচ। দেখতে সুন্দর, চালচলনও সুন্দর, কথাবার্তাও সুন্দর। তবে কখনো কথাবার্তা বলিনি। কিভাবে বলব তাই বুঝিনি। তবে পিছন পিছন লেগে আছি। সকালবেলা ভার্সিটির সামনের ওই বুড়োর স্টলে বসে থাকি। চা খাই না। তাও বুড়োর সাথে এই কয়দিনে খাতির ভালই হয়েছে। তাই একদিন বুড়োটা বসে থাকার কারণ জিজ্ঞাস করেছিল। বুড়োকে ব্যাপারটা বলেছি। আরও বলেছি, যেদিন মেয়েটার সাথে আলাপ হবে সেদিন তার সাথে চা খাব। বুড়োর চায়ের দামটাও আমিই দিব। বুড়ো তখন পোকায় খাওয়া দাঁত বের করে বেশ হাসতেছিল। মেয়েটার সাথে আলাপ হওয়ার পর তাকেও বুড়োর দোকানে নিয়ে আসব। বুড়ো তখন আবার হাসবে। আর তিনজনে মিলে গরম গরম চা খাব।

সকাল করে ভার্সিটির সামনে আসায় অফিসে লেট হচ্ছে। কয়দিন থেকেই বস ব্যাপারটা দেখছে। কিন্তু কিছু বলছে না। না বললেই ভাল। আর যখন বলবে তখন দেখা যাবে।
……… ……… ………

মেয়েটা আজকে নীল শাড়ি পড়েছে। আরো সুন্দর লাগতেছে। চশমাটাও মানিয়েছে। খুবই সুন্দর লাগতেছে। কিন্তু অফিসের সময় হয়ে যাচ্ছে। এখনি যেতে হবে। তাই মন চাইলেও আর থাকা গেল না
……… ……… ………

সারাদিন অফিস করতে আর ভাল লাগেনা। মেয়েটার সাথে কিভাবে কথা বলা যায় ভাবছিলাম। ভাবতে ভাবতেই বাসায় পৌছালাম। রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া দিচ্ছিলাম। পিছনে তাকাতেই দেখি সেই মেয়েটা!!
মেয়েটা এইদিকে কেন!! কিছু বুঝলাম না। কিছু না বুঝেই দাঁড়িয়ে থাকলাম। মেয়েটা কাছে এসে বলল,

- “সুন্দর ফলো করলাম, তাই না?”

কি বলব বুঝলাম না। তাই শুধু মাথা নাড়লাম

- “চমকে গেলেন নাকি?”

এরকম প্রশ্নে কেমন উত্তর দিতে হয় তাও জানা নেই। তাই চুপ করেই থাকলাম।

- “কি হল!! কথা বলেন না কেন? ওহ সরি, আপনে কি বোবা?”

বলে কি!! বোবা যে না তা প্রমাণ করতেই বললাম- ”না”

- ”ভাল। কয়দিন পিছন পিছন তো ভালই ঘোরাঘুরি করলেন”

হায় হায়, মেয়েটা তো সবই জানে। এখন কি যে হয়!!

- “কি হল কিছু বলেন না কেন? শরীর খারাপ নাকি?”

অবস্থা কোনদিকে যে যায় বুঝতেছি না। উত্তরগুলো মাঝামাঝি দেওয়াই ভাল মনে করলাম। তাই বললাম,

- “না মানে, একটু খারাপ”

- “ওও, আমি মনে করলাম আজ একটু আপনার সাথে ঘুরব। ঠিক আছে, আজ তাহলে যাই”

- “আরে না, বেশী খারাপ তো না। একটু খারাপ ছিল। হঠ্যাৎ করেই ভাল হয়ে গেল। ঘুরতে পারব। কোন সমস্যা নেই। কোথায় ঘুরবে বল”

- “চলেন কোথাও চা খাই। আর হঠ্যাৎ শরীর ভাল হওয়ার কারণটা কি?”

- “তেমন কিছু না। মানে তোমার সাথে কথা বলে ভাল লাগল। তাই ভাল হয়ে গেল”

- “ঠিক আছে। এরকম হঠ্যাৎ হঠ্যাৎ ভাল হলেই চলবে”

প্রথম একটা মেয়ের সাথে ঘোরাঘুরি। কেমন যেন একটা অনুভূতি। তবে ভালই লাগছে।
এই যা, মেয়েটার নামই শুনলাম না। থাক, পরে নাহয় শুনে নিব। এখন ঘোরাঘুরি করি

লিখেছেনঃ Sadik Awal

No comments:

Post a Comment