Friday, March 17, 2017

" রি " লিখেছেনঃ ( পুপে )

 " রি "
লিখেছেনঃ ( পুপে )

— রি, শোন না একটু।
— হু ?
— ভালো আছিস?
— হু
— ঘুমাচ্ছিলি?
— উহু
— কি এত হু হু করছিস ! একটু কথা বল না।
— তোর মত গাধার সঙ্গে আমার কোন কথা নেই।
— মানে কি? আমি আবার কি করলাম?
— কি করিসনি সেটা জিজ্ঞেস কর।
— আরে আজব, না বললে বুঝবো ক্যামনে?
— আমি আজব ই। তোর ইয়ের কাছে যা, সে আজব না।
— আমার ইয়ে?
— কেন এখন আপনার ইয়ে কে চিনতে পারছেন না? রাত জেগে আপনার নোট লিখে দেয় আরও কত্তো কি !
— ও আচ্ছা, এবার বুঝলাম।
— কিছুই বুঝিসনি, রাখছি এখন।

অর্ক কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই লাইন কেটে দিল রিদান্নিতা । কিছুই ভালো লাগছে না তার। ইদানিং খুব অল্পতেই মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে, এটা যে ভালো হচ্ছেনা দিব্যি বুঝতে পারছে কিন্তু তবুও কিছুতেই কিছু হচ্ছে না। অর্ক আর রিদান্নিতা দুজনেই ভীষণ ভালো বন্ধু। বন্ধু ছাড়া অন্য কিছুই কখনো ভাবেনি অর্ককে কিন্তু ইদানিং স্পর্শীয়ার সঙ্গে অর্কের বন্ধুত্ব কিছুতেই মেনে নিতে পারছেনা। আর স্পর্শীয়া মেয়েটাও ভীষণ গায়েপড়া স্বভাবের যেন অর্ক ছাড়া আর কোন ছেলেই নেই পৃথিবীতে ! আচ্ছা অর্ককে কি ভালোবাসে সে ? এটা ভেবেই নিজের উপর খুব রাগ হল রিদান্নিতার। কিসব ছাইপাশ ভেবেই যাচ্ছে কখন থেকে। অর্ককে কেন ভালোবাসবে সে, অর্ক তার বেষ্ট ফ্রেন্ড, ব্যস আর কিচ্ছুনা।

ღ দুইদিন পরের দৃশ্যপট...

— রি,এই রি, কই যাচ্ছিস ?

দৌড়ে রিদান্নিতার সামনে গিয়ে হাঁটুতে দু'হাত দিয়ে দাঁড়ালো অর্ক।

— কি হল কথা বলছিস না কেন রি ?
— কোথায় যাব আর, আমার তো দুটা পাঁচটা শশুরবাড়ি আছে, ওখানে যাচ্ছি।
— যাচ্চলে। তোর এত শশুরবাড়ি আর আমিই জানলাম না। এইটা কিছু হইল !

চুপ করে আছে রিদান্নিতা। চোখ জলছে, এক্ষুনি জলে ভিজে যাবে। অর্ককে এই চোখের জল দেখানো যাবেনা। দুইদিন নিজের সঙ্গে প্রতিটি মুহূর্ত যুদ্ধ করার পর আজ ভার্সিটি এসেছে সে। এসেই অর্ককে স্পর্শীয়ার সঙ্গে দেখবে ভাবতে পারেনি ।

— কিছুনা, আমাকে যেতে দে।
— যেতে তো দেবই, তার আগে বল তোর মুখ চোখ শুকনো লাগছে কেন ? — আমাকে কি তোর ইয়ের মতো ন্যাকা মেয়ে পাইছিস যে ফ্যাঁচফ্যাঁচ করে কাঁদব আর ভেজা ভেজা লাগবে ?

এই বলেই মুখ নিচু করে ফেলল রিদান্নিতা। পৃথিবী উজার করে কান্না পাচ্ছে ওর। এই পাগলটা কেন বুঝেনা সে ওকে ভালোবাসে।

বেশ কিছুটা মুহূর্ত কেটে গেল, কেউ কোন কথা বলছেনা। অর্ক হাত বাড়িয়ে রিদান্নিতার হাত ধরলো, যেন স্পর্শেই "রি" কে সব বুঝিয়ে দিতে চাইছে।

— ন্যাকা মেয়েটা বোধহয় আমার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে, বুঝলি রি।

নিরবতা ভেঙে বলল অর্ক।

— মানে?

ইতিওতি তাকালো "রি", কোথাও স্পর্শীয়াকে দেখতে পেলনা ।

— এভাবে খুঁজলে হবে?

কিছু না বলে প্রশ্নচোখে তাকাল রিদান্নিতা অর্কের দিকে।

— আমার ইয়েকে দেখতে হলে যে আমার চোখের দিকে তাকাতে হবে মিস হিংসুটে !

অদ্ভুত এক ভালো লাগা মুহুর্তেই সব অভিমান ভুলিয়ে দিল রিদান্নিতার। অনেকক্ষণ ধরে জমে থাকা মুক্তোদানার মতন অশ্রু জল টা গড়িয়ে পড়লো গাল বেয়ে। কনে দেখা আলোয় ভেজা চোখ আর ঠোঁটের কোণে আলতো হাসি নিয়ে রিদান্নিতা অর্কের হাত খুব করে আকঁড়ে ধরলো !

No comments:

Post a Comment