Friday, March 17, 2017

নির্বাক ভালবাসা…....... লিখেছেনঃ অনিক বাসাক

ღনির্বাক ভালবাসা….......ღ
ღভালোবাসা দিবস উপলক্ষে বিশেষ গল্প-০৪ღ
নির্বাক ভালবাসা….......
লিখেছেনঃ অনিক বাসাক

দোকান এ দাড়িয়ে খেলনা দেখছি । আজ পাশের বাড়ির এক ছোট্ট বোন এর ৩ তম জন্মদিন। ওদের বাড়ির সাথে আমাদের অনেক ভাল সম্পর্ক। তাই যেতে ই হবে। তার উপর ছোট্ট মণিটা আধো আধো করে বলে গিয়েছে যে ভাইয়া ভাইয়া তুমি আসবে কিন্তু। না হলে আমি কান্না করব..................
তো না গিয়ে কিভাবে থাকব। কিন্তু কি যে খেলনা দিব পাচ্ছি না ভেবে। হটাত একটা পুতুল এর দিকে চোখ আটকে গেল। ঠিক যেমন রূপকথার গল্পে থাকে। অনেক ক্ষণ কেমন যেন আনমনে তাকিয়ে থাকলাম... আমার এতটাই ভাল লাগল যে আমি দুই টা কিনে ফেললাম। একটা গিফট দিব আর একটা রেখে দিব। যেদিন আমার ভালবাসার মানুষ এর সাথে দেখা হবে সেদিন তাকে দিব।

এতক্ষণ এ চোখ পরল ঠিক পাশে দারিয়ে থাকা এক রাজকন্যার দিকে। ঠিক আমি যে পুতুল টা কিনলাম ঠিক সেই রকম। চোখ যেন পরতেই চায় না। সে ও কি যেন গিফট কিনছে আর আমার দিকে চেয়ে মিট মিট করে হাসছে............ একটা ছেলে কে এভাবে পুতুল কিনতে দেখলে হয়ত হাসি পাবার ই কথা...... হা হা হা হা ...।।

আমি তার থেকে একটু আরাল এ দাঁড়ালাম, আর তাকে আরাল থেকে দেখতে লাগলাম। একটু পর সে চলে গেলে আমি ও চলে আসলাম। আর দু চোখ এ নিয়ে এলাম কোন এক অজানা রাজকন্যার সুন্দর ওই মুখ এর স্বপ্ন । কিছু তেই যেন ওই চোখ এর চাহুনি, ওই ভাবে পিট পিট করে হাসা , কিছু ই ভুলতে পারছি না.........।

সন্ধার পর জন্মদিন এর অনুষ্ঠান এ গিয়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতেই আমি যেন কি দেখে চমকে গেলাম। যেন অনেক গুল সোনার ভিতর একটা হীরের টুকরো ঝলমল করছে। এত্ত গুল ছোট্ট শিশুর মাঝে তাকে যেন আর ও অনেক মিষ্টি লাগছে। হম। এই সেই মেয়েটি যাকে আমি আজ দেখেছিলাম। .....................

তাকে এখানে পাব এ তো কল্পনার ও বাহিরে। একজন এর থেকে জানতে পারলাম এটা এই বাড়ির অ্যান্টির কেমন যেন কাছের আত্মীয় ,। সোফা তে বসে আমি একমনে সুধু তাকে ই দেখে যাচ্ছি , যার জন্মদিন এ এসেছি সে যে কখন এসে ঠিক টার জন্য আনা উপহার টা আমার হাত থেকে নিয়ে গেছে তাও ঠিক পাই নি।

একটু পরে খাবার দেওয়া হলে মেয়েটা কোথাও জায়গা না পেয়ে আমার পাশে এসে বসে। আমার মন এর ভিতর তখন যেন ঝড় শুরু হয়ে গিয়েছে। চেষ্টা করছি কথা বলার পারছি না। শেষ এ কষ্ট করে হুট করে বলে ফেললাম কেমন আছেন? মেয়ে টা চমকে ওঠার মতন করে তাকিয়ে আবার মুখ ফিরিয়ে নিল।
আমি ভাবলাম আমাকে চেনে নি হয়ত। তাই দোকানের দেখাদেখির কথা টা বললাম। আবার ও প্রশ্ন করলাম যে কেমন আছেন? কিন্তু কোন উত্তর নাই।
নিজেকে কেন যেন অপমানিত মনে হচ্ছে। আর ও কিছু বললাম কিন্তু কোন উত্তর দিল না।
নাহ এই রকম অপমান আর ভাল লাগল না। আমি বেশ জোরে করে চেঁচিয়ে বলে উঠলাম – এই যে আপনি নিজেকে কি মনে করেন? অনেক সুন্দরী তাই এতো অহঙ্কার? বোবা নাকি যে একটা কথারও কি উত্তর দিতে পারলেন না। বোবা হয়ে আছেন কেন? .........।

আমার বলা টা মনে হয় অনেক বেশি জোরে হয়ে গিয়েছিল। তাই তো দেখলাম সবাই আমার দিয়ে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
কিন্তু সবচে অবাক হলাম যখন দেখলাম মেয়েটার চোখ এ জল। সে মুখ টা চেপে ধরে দৌরে পাশের ঘর এ চলে গেল। কিছু ই বুঝতে পারলাম না।

পরিবেশ টা স্বাভাবিক করে যার জন্মদিন তাঁর মা আমার কাছে এলেন। আমি তাঁর কাছে ক্ষমা চাইতেই অ্যান্টি বললেন যে তুমি এটা কি করলে?!! তুমি জান ? ও সে সত্যি বোবা। ক্লাস থ্রি তে থাকতে একটা দুর্ঘটনার পর থেকে ও কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। আর তুমি আজ ওইটাই ওকে সবার সামনে এভাবে মনে করিয়ে দিলে?

অ্যান্টি চলে গেল। আমি যেন আমার নিজের বাকশক্তি হারিয়ে ফেলছিলাম। পৃথিবীর সবচেয়ে নগণ্য কীট বলে মনে হতে লাগল। একটা তিব্র অপরাধ বোধ আমাকে যেন আঁকড়ে ধরে গলা টিপে মেরে ফেলছে.........।। নাহ... আমি অনেক ভয় নিয়ে আস্তে আস্তে পাশের ঘর এ ঢুকলাম...।।

আমার সেই রাজকন্যা একটা খাট এর উপর পা ঝুলিয়ে বসে আছে। সামনে যেতে দেখি সে কাঁদছে। শব্দ করে কান্নার থেকে এই নির্বাক কান্না যে এতটা তিব্র বেদনার হয় আজ প্রথম বুঝলাম...............
আমি রাজকন্যার পা এর সামনে মেঝেতে বসে পরলাম। আমাকে দেখে ই ও নিজেকে সামলে নিতে চেষ্টা করল। আমি দু হাত জোর করে ওর সামনে বসে রইলাম। ইশারা তে বুঝাতে চেষ্টা করলাম যে আমি জেনে শুনে করি নি। কোন দিন ইশারা তে কাউকে কিছু বুঝাই নি। তাই মনে হয় বুঝানোর ব্যাপার টা গোলমাল হয়ে যাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল একটা বানর পাগল এর মতন হাত নড়াচ্ছে...............।।
আমার এ রকম দেখে দেখি রাজকন্যা হেসে ফেলেছে............। আমি বুঝাতে পারব না কি সুন্দর সেই হাসি। চোখ এ এখন ও জল গুল লেগে আছে আর মুখ এ সবে মাত্র হাসি ফুটল। মনে হল ভোঁর এ দূর্বা ঘাস এর উপর চিক চিক করা একটা শিশির বিন্দু...।।

রাজকন্যা ইশারা তে বুঝাল যে সে বলতে পারে না কিন্তু শুনতে পারে , তাই আমি মুখ এ বলতে পারি তাকে । সে মেঝে থেকে আমাকে উঠে আসতে বলল। আমি যেয়ে তাঁর পাশে বসি। ধীরে ধীরে কথা সুরু হয়। মানে সে ইশারা তে বুঝাল, আর আমি মুখ এ বলতে লাগলাম । আমি এর আগে অনেক বোবা মানুষ কে দেখেছি কিন্তু তারা ইশারা তে কি বুঝায় টা বুঝি নি। কিন্তু রাজকন্যা যা বুঝাতে চাচ্ছে তাই আমি ঠিক ঠিক বুঝতে পারছি। কেন এতটা বুঝতে পারছি বুঝতে পারছি না। রাজকন্যা ও কিছুক্ষণ পর জানতে চাইল যে আমি কিভাবে তাঁর সব কথা এত ভাল করে বুঝতে পারছি? আগে নাকি এত জলদি তাঁর কথা কেউ বুজতে পারে নি।
কথা টা শুনে আমার অনেক ভাল লাগল। কিছু ক্ষণ এর ভিতর আমারা অনেক ভাল বন্ধু হয়ে যাই, আমাকে ওই দুই টা পুতুল কেনার কথা জিজ্ঞাসা করল... আমি বললাম যে জীবনে যাকে সবচে বেশি ভালবাসব, যাকে সারা জীবন এর জন্য জীবন সাথী করে নিব তাঁর হাতে ওটা তুলে দিব......... সে দেখি মিটিমিটি করে হাসছে...... আমি তাকে বলি সে ফেসবুক ব্যবহার করে কি না। সে তাঁর আইডি আমাকে দিল। ...........................
অনুষ্ঠান ও এদিকে শেষ,রাজকন্যা চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়াল। আমার বুক এর ভিতর টা ধুক করে উঠল...। হয়ত আর দেখা হবে না............
ও টা টা জানিয়ে বাড়ি চলে গেল আর এদিকে আমি তো বাড়ি এসে ই ফেসবুক খুলে রাজকন্যা কে অ্যাড দিলাম। ৩০ মিনিট পর দেখি রাজকন্যা অনলাইন এ ।
সে দিন টা রাতে অনেক ক্ষণ কথা হল চ্যাট এ । রাজকন্যা নিজে থেকেই বলল যে সে নাকি আমার সাথে কথা বলতে চাচ্ছিল কারন তাঁর কথা গুল আমি অনেক ভাল বুঝতে পারি।

আমি তাকে ভয় এ ভয় এ জিজ্ঞাসা করলাম যে তাঁর মোবাইল আছে কি না, তাহলে যখন ফেসবুক এ আসব তখন তাকে মিসস কল দিলাম। সে উত্তর দিল হম আছে তো। কথা বলতে পারি না তাই বলে কি এসএমএস ও লিখতে পারব না? হা হা হা ...............।
সে তাঁর নাম্বার দিল , ওই দিন অনেক রাত হয়ে গিয়েছিল।

সকাল এ উঠে কিছু ভাল লাগছিল না। বার বার রাজকন্যার মুখ টা দেখতে ইচ্ছে হচ্ছিল। মাত্র একদিন পরিচয় তাতে ই এই অবস্থা ?...... এ আমার কি হল? তবে কি তাকে মার্কেট এ প্রথম দেখে আমার যে ভাললাগা সৃষ্টি হয়েছিল টা ভালোবাসা তে রুপান্তর হয়েছে? ভাবছিলাম যে তাকে এসএমএস দিব কি না,...।। মোবাইল টা হাতে নিতে ই অবাক!!!!! রাজকন্যার এসএমএস। >>> শুভ সকাল।
আমি আর দেরি না করে এসএমএস দিলাম তুমি কই? কি কর? সকাল এ নাস্তা করেছ?

। এসএমএস সেন্ড করেই আমি লজ্জা পেয়ে গেলাম... এ আমি কি রকম এসএমএস দিলাম। আমি তাকে প্রথম দিন এই ভালবেসে ফেলেছি তাই বলে কি এই রকম এসএমএস দিতে হয়? রাজকন্যা এখন কি ভাববে? আমাকে অনেক খারাপ ছেলে ভাবছে হয়ত...।। আমি কি তাকে হারিয়ে ফেলব?

ভাবতে ভাবতে রাজকন্যার এসএমএস>> বাব্বা বন্ধু আমার এত চিন্তা? হা হা হা হম খেয়েছি। আমি এখন বাড়িতেই। বসে আছি।

আমি এসএমএস দিলাম যে আমি ফেসবুক এ আছি। তুমি সময় পেলে এস। কিছু ক্ষণ পরে ই সে এল। কথা হল কিছু ক্ষণ। আমার প্রতিটা ক্ষণ যেন এখন সুধু তাঁর জন্য অপেক্ষা করা। সারা দিন ভাবি সুধু সে কখন ফেসবুক এ আসবে। কিচ্ছু আর ভাল লাগে না। সারা দিন সুধু তাঁর কথা। .....................

আমাদের নিয়মিত কথা হতে লাগল ফেসবুক এ ।এর মাঝে ৩ – ৪ দিন তাঁর সাথে দেখা ও করেছি। আমি অনেক অল্প সময় এ ওর সবচে কাছের একজন হয়ে উঠেছি ।
ও নিয়মিত আমার খোঁজ নিত। সকাল এ খেয়েছি কি না, পরেছি কি না, ঠিক মতন ঘুম পারছি কি না সব সব..................... আমার এলোমেলো জীবন টা যেন দূর থেকে ও সাজিয়ে দিচ্ছিল। তবে কি সে ও আমাকে ভালবেসে ফেলেছে?? ভাবতাম কিন্তু সাহস করে বলতে পারি নি......... যদি সে হারিয়ে যায়। আমি কোন দিন তাকে হারাতে চাই না।
আমরা মাঝে মাঝে ই বিকাল এ দেখা করতাম। আমাদের একটাই প্রিয় জায়গা ছিল, লেক এর পার এর ছায়া ঘেরা একটা বেঞ্চ। যে দিন দেখা করতাম ওই জায়গাতেই। ও যখন ইশারা তে আমাক কিছু বলত মনে হত যারা কথা বলতে পারে তাদের সব কথাও আমি এত পরিস্কার বুঝতে পারি না। কত কথা হত আমাদের...... কিন্তু এক অদ্ভুত নিরবতা...।

এদিকে আমার মন এর ভিতর টা অস্থির হয়ে উঠতে থাকে। আমি যতই ভাবি রাজকন্যা কে কিছু বলব না তবু যেন নিজের ভিতর টা আর ও অস্থির হতে থাকে।
ভাবলাম সে কি ভাববে ? আমি জানি আমি তাঁর অনেক অনেক প্রিয় একমাত্র মানুষ কিন্তু কেন? আমি রাজকন্যার সব কথা বুঝতে পারি তাই? নাকি সে আমাকে ভালবাসে? আমি আর এই দ্বিধা সহ্য করতে পারছিলাম না।
কিন্তু তাঁর সামনে গেলে বলতে পারি না। তাই আজ সিদ্ধান্ত নিলাম আজ যে করেই হোক ফেসবুক এ বলে দিব...............।
রাত এ সে ফেসবুক এ আসল। আমি সৃষ্টিকর্তার নাম স্মরণ করে তাকে লিখলাম>>

“রাজকন্যা আমি তোমাকে আমার মনের রাজ্যে রাজকন্যা করে রাখতে চাই! তোমাকে প্রথম যে দিন দেখেছিলাম সেদিন ই ভালবেসে ফেলেছি......। জানি না আমি তোমার যোগ্য কি না। কিন্তু সুধু এই টুকু জেনে রাখ , মন এর যে যায়গা তে ভালোবাসা টা যত্নে রেখে দেই সেই যায়গা তে তোমার নাম লিখা হয়ে গিয়েছে। তুমি আমাকে গ্রহন না করলেও আমি কোন দিন অন্য কাউকে আর ভালবেসে আমার মন এ বসাতে পারব না। ওই যায়গা টা সুধু ই তোমার..........................................।“

অনেক ক্ষণ রাজকন্যার কোন উত্তর পাচ্ছি না। অনেক্ষন পর সে লিখল>
>> তা হয় না। তোমার সুন্দর একটা জীবন এর সাথে আমার নির্বাক জীবন মিলবে না। আজ তুমি যেটা ভালোবাসা ভাবছ তা ভালোবাসা নয়। এটা হল আমার উপর তোমার করুনা। আমি তোমার থেকে এটা আশা করি নি...।। হয়ত আমাদের আর দেখা হবে না.........

রাজকন্যা চুপ হয়ে গেল। আর আমার মনে হতে লাগল আমার ভিতর থেকে কে যেন আমার হৃদয় টা ছিরে নিয়ে চলে যাচ্ছে। জীবনে প্রথম আর শেষ বার এর মতন কাউকে ভালবাসলাম...। আর আজ তাকে হারিয়ে ফেললাম.........।

সারা টা রাত দু চোখ এর জলে কাটল...।। রাজকন্যা কি সত্যি আমাকে ভালবাসে না? নাকি ভালবাসে? না হয়ত সুধু ই বন্ধু ভাবে......
কখন দু চোখ এর পাতা এক হয়ে গিয়েছে জানি না। সকাল এ ঘুম ভাঙতেই মনে হতে লাগল হে সৃষ্টিকর্তা আমার ঘুম কেন ভাঙ্গালে...। তাঁর থেকে সারা জীবন এর জন্য চিরনিদ্রা তে শুইয়ে দিলে ই তো পারতে।

নাহ আজ রাজকন্যার কোন এসএমএস নাই। ফেসবুক খুলে দেখি রাজকন্যা তাঁর আইডি বন্ধ করে দিয়েছে............।

কি করব কিচ্ছু বুঝতে পারচিলাম না। আজ ভালোবাসা দিবস।। আর আজ ই আমার জীবন থেকে আমার ভালোবাসা হারিয়ে গেল। ভালোবাসা নয়।। সে তো আমার জীবন।। তাই বলা যায় যে জীবন হারিয়ে গেল...।। এভাবে প্রান হীন জীবন রেখে কি লাভ!!

অনেক ভয় নিয়ে রাজকন্যা কে এসএমএস দিলাম যে >> রাজকন্যা বন্ধু হিসাবে তোমার সাথে আমি শেষ বার দেখা করতে চাই...। আমাদের সেই লেক এর ধার এ ...আজ বিকাল ৪ টায়।
আমার বিশ্বাস ছিল সে আসবে। কারন সে যে আমার জীবন। আর আমার জীবন কে আমার থেকে ভাল কে চিনবে।

আমি অপেক্ষা করছি.........।। হম ওই তো আমার রাজকন্যা আসছে...
রাজকন্যা এসে আমার পাশে বসল... কিন্তু আমার দিকে চোখ তুলে তাকাচ্ছে না। কিচ্ছু বলছে ও না।
কি হল তাঁর...।।
আমি আর কিছু বললাম না......... সুধু তাঁর হাত এ সেই পুতুল টা তুলে দিলাম, যেটা আমি কিনছিলাম যে , তাকে ই দিব যাকে আমি আমার জীবন সাথী করে নিব...।

পুতুল টা হাতে নিয়ে রাজকন্যা আমার দিকে চোখ তুলে তাকাল...। এতক্ষণ পর আমি লক্ষ্য করলাম যে রাজকন্যার চোখ এ জল। তাই তো সে চোখ তুলে তাকাচ্ছিল না...।

সে আমাকে ইশারা তে বলল যে তুমি তো এটা তাকে ই দিতে চেয়েছিলে যাকে তুমি তোমার জীবন সাথী করে নিবে।। তবে আমাকে দিচ্ছ কেন? তুমি তো আমাকে আজ এসএমএস দিলে যে আমাদের আর দেখা হবে না... তবে এটা আমাকে কেন দিচ্ছ?

আমি বললাম হম। সত্যি তো। বন্ধু হিসাবে আমাদের আর দেখা হবেন না। .........।

এখন আমাদের দেখা হবে ভালবাসার মানুষ হিসাবে। কারন তুমি আমার জীবন...। আমার ভালোবাসা। তুমি কথা বলতে পার না তো কি হয়েছে... যারা বলতে পারে তাদের থেকে ও যে আমি তোমার এই নির্বাক কথা অনেক বেশি বুঝি...।। তবে বলা আর না বলার মাঝে পার্থক্য কই। ? আর তোমাকে করুনা কোন দিন ও করি নি। কারন নিজের জীবন কে করুনা করা যায় না। সুধু ই ভালোবাসা যায়। অসীম ভালোবাসা...........................।।

রাজকন্যা ফুপিয়ে ফুপিয়ে কেদে উঠল...। আজ এই কাঁদা তে শুধু ই ভালোবাসা। আমাকে সে বুঝাল যে সে ও আমাকে তাঁর জীবনে এর থেকে বেশি ভালবাসে। কিন্তু সে চায় নি যেন তাঁর নির্বাক জীবন টার জন্য আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে যায়.........। তাই বলতে পারে নি...। আর আমার থেকে দূরে যেতে চেয়েছিল............।।

পাগলী কোথাকার...। একদম পাগলী......।

রাজকন্যার চোখ এর জল মুছিয়ে দিতে ই সে আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরল। আর আমার বুক এর ভিতর মাথে রেখে বিন্দু বিন্দু করে চোখ এর জল ফেলতে লাগল............।
কাঁদুক...। কিছু কিছু চোখ এর জল কখনো মুছে দিতে হয় না ..................

আমি ও আমার রাজকন্যার মাথায় একটা আলত করে চুমু দিয়ে তাকে জরিয়ে ধরি.....................
হোক না নির্বাক ভালোবাসা, তাতে কি...। তাঁর এই নীরবতা যে সব কথা কেও হার মানায়........................।
এই সময়ে ২/১৪/২০১৩ ১০:১৩:০০ PM 

No comments:

Post a Comment