Sunday, January 10, 2016

Nachiketa ambition

অ্যাম্বিশান, অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
কেউ হতে চায় ডাক্তার, কেউ বা ইঞ্জিনিয়ার,
কেউ হতে চায় ব্যবসায়ী, কেউ বা ব্যারিস্টার,
কেউ চায় বেচতে রূপোয়- রূপের বাহার, চুলের ফ্যাশান।
আমি ভবঘুরেই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশান !
ঠকানোই মূল মন্ত্র, আজকের সব পেশাতে,
পিছপা নয় বিধাতাও, তেলেতে জল মেশাতে।
ডাক্তার ভুলছে শপথ, ঘুষ খায় ইঞ্জিনিয়ার,
আইনের ব্যবচ্ছেদে, ডাক্তার সাজে মোক্তার।
যদি চাও সফলতা, মেনে নাও এই সিস্টেম-
ফেলে দাও স্রোতের মুখে- আদর্শ, বিবেক ও প্রেম।
এ সমাজ মানবে তোমায়, গাইবে তোমারই জয়গান।
আমি কোনে বাউল হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশান !
বড় যদি চাইবে হতে, সেখানেও লোক ঠকানো।
‘সৎ ভাবে বাঁচো বাঁচাও’, একথা লোক ভোলানো।
সৎ ভাবে যাবে বাঁচা, বড় হওয়া যাবে নাকো।
শুধু কথা না শুনে, বড়দের দেখেই শেখ।
এ সবই থাক তোমাদের, আমি বড় চাই না হতে,
ধুলো মাখা পথই আমার, তুমি চড় জয়রথে।
শত লাঞ্ছণা দিও, করো আমায় অসম্মান।
তবু আমি বোকাই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশান !
আমি ভবঘুরেই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশান !
আমি কোনে বাউল হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশান !!
তবু আমি বোকাই হব, এটাই আমার অ্যাম্বিশান !!!!

একদিন ঝড় থেমে যাবে, অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
একদিন ঝড় থেমে যাবে,
পৃথিবী আবার শান্ত হবে।
বসতি আবার উঠবে গড়ে,
আকাশ আলোয় আবার উঠবে ভরে,
জীর্ণ মতবাদ সব ইতিহাস হবে।
পৃথিবী আবার শান্ত হবে
আজ অশান্ত দিন,
বেঁচে থাকা আশা ক্ষীণ;
তবু পথ চাওয়া অবিরাম।
ধূসর আকাশ আজ,
কাল নেবে বধূ সাজ
এই বিশ্বাসেই সংগ্রাম।
একঘেয়ে একটানা অভ্যেসে তাই-
গান গেয়ে স্বপ্ন বেচে যাই
প্রশ্নেরা তবু শুধোয়- কবে,
পৃথিবী আবার শান্ত হবে ?
দু’চোখ আষাঢ় হায়!
খরা আজ চেতনায়,
প্রত্যাশা ফানুসে বদলায়।
ভাষা আর সেতু নয়,
ভাষা আজ অন্তরায়
কাব্যেরা কাঁদে যন্ত্রণায়।
এই শরশয্যায় আজ অর্জুন,
নেভাতে এসে তৃষার আগুন –
বহুপ্রাণ যদি মিশে যায়, তবে-
পৃথিবী আবার শান্ত হবে।
কে যায় ! , অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
দিনকে রাত করে, রাত্রিকে দিন,
সময় তবলায় বাঁজিয়ে তা ধিন
কৌমার্য হরণ ফুলশয্যায়-
তবুও কনে দেখা মেঘে সন্ধ্যায়।
দেখা বা না দেখায় মিশে একাকার
রেসের মাঠে কভু মহা শনিবার
পঁচিশে বৈশাখ সৃষ্টি মিছিলে
শ্যাম্পেন সূধা আকন্ঠ গিলে
আতলামি সম্বল কথা মালায়,
ধরণী দ্বিধা হয় সে লজ্জায় !
আইগুম বাইগুম তাড়াতাড়ি
যদু মাস্টার শ্বশুরবাড়ি।
শ্বশুরবাড়ি ভারি মজা,
শ্বশুর ব্যাটার মাথায় বোঝা।
পণের টাকা যোগাড় করে
শুধছে সে ধার বছর ধরে।
গোঁদের ওপর বিষের ফোঁড়া,
জামাই ষষ্ঠী’র ইলিশজোড়া
তবু শ্বশুর মনটা কালো
যদু আমার মাস্টার ভালো
ছাত্র পড়ায় কড়া শাষণ
শেখায় সে নীতিকথার ভাষণ।
চুরি বা শ্রম চুরি যাহোক এবার
কোনটা জোচ্চুরি আসল ব্যাপার !
সমাজতন্ত্রের ছাতার তলায়-
ওই দম্পতি কেন বাসর সাজায় ?
না, তবুও ভালবাসা,
না, সত্যিকারের আশা
শুধু তোমাকে ভালবাসি
শুধু তোমার মধুর হাসি
পুরনো একথাও গানের মত
চেনা চেনা স্লোগানের মত
বিশ্বাসহীনতায় কে বাঁচতে চায়
বিশ্বাস বোঝায় যেন কন্যাদায় .
হোক না যত বাড়াবাড়ি
হোক না যতই মারামারি
হোক না যতই বম ব্লাস্টিং
সংবাদপত্রে নেইম কাস্টিং
ভোটের সময় হাল্লাগুল্লা
গানের বিষয় রসগোল্লা !
অমুক কুমার তমুক কুমার,
সাত, ছেলের বাপ চিরকুমার !
দেশটা চালায় ডন মাফিয়া
দূর্নীতি রাজনীতি পরকীয়া
ডানে মন্ত্রী বাঁয়ে মন্ত্রী-
মন্ত্রী তো নয় ষড়যন্ত্রী !
অনিবার্ণ (আমার বন্ধু) , অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
“অনিবার্ণ আমার বন্ধু। অনির্বাণের সাথে যখন আমার দ্বিতীয়বার দেখা হয়েছিল, তখন সময়টা ছিল বড় অদ্ভুত! আমরা হাইওয়ের উপর দিয়ে, অনেক দূরে একটা অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছি। লাল আকাশ, সন্ধ্যে হয়ে আসছে, দুপাশে ফাঁকা মাঠ। আমরা চা খাব বলে গাড়িটা দাঁড় করিয়েছি একটা বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত চায়ের দোকানে। এমন সময় দেখতে পেলাম, লাল আকাশকে পেছনে রেখে, একটা ছেলে মাঠ পার হয়ে আমার দিকে এগিয়ে আসছে। আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললঃ “চিনতে পারছিস ?”
আমি বললামঃ “না।”
ও বলেঃ “ভালো করে দেখ।”
আমি সেই চুরি যাওয়া আলোতে ওকে চিনলাম- আমার বন্ধু অনিবার্ণ। আমার চোখের সামনে পুরনো দিনগুলো ছায়াছবির মত ভেসে উঠছে।
আমি ওকে প্রশ্ন করলামঃ “অনিবার্ণ, তুই এখানে?”
ও বললোঃ “তাইতো কথা ছিল বন্ধু। আমাদের তো এখানেই থাকার কথা ছিল।”
আমার পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাচ্ছে। আমি খুব বোকার মত ওকে প্রশ্ন করলামঃ অনিবার্ণ, কি করছিস এখন?
ও বললোঃ “যা কথা ছিল বন্ধু, মানুষের মাঝখানেই আছি।”
আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিনা। একটা অপরাধ বোধ আমাকে গ্রাস করছে। ও বললোঃ “তোর দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
আমি গাড়িতে গিয়ে বসলাম।
ও জানালার কাছে এসে বললোঃ “এখন তো তোর নাম হয়ে গেছে-তুই তো বিখ্যাত হয়ে গেছিস! সুখেই আছিস, কি বল?”
আমার গাড়ি স্টার্ট নিয়ে নিয়েছে, অনিবার্ণ আমার জীবন থেকে মিলিয়ে যাচ্ছে। অনির্বাণের শেষ কথা গুলো আজোও আমার কানে আলপিনের মত বেঁধে-
“সুখেই আছিস”…”সুখেই আছিস”….”
দেখে যা, যা অনিবার্ণ,
কী সুখে রয়েছে প্রাণ।
কী সুখে রয়েছি আমি,
কী সুখে বেচেছি গান।
সেদিনের মিটিং এর মাইক
সেদিনের কলেজের স্ট্রাইক
সেদিনের মাতাল পদক্ষেপ
বেঠিক সিদ্ধান্তের আক্ষেপ-
আজকের এই মাপা পদচারণ
সেদিনের তালের কাছে ম্লান।
শ্রমিকের মুক্তির গান,
কৃষকের হাতিয়ারে শাণ,
শ্রেণীহীন সমাজের স্বপ্ন,
ঘৃণার প্রতিপালনেতে যত্ন-
আজ তোর ঘামে
ভেজে যে পথের ধুলো
হয়তো সেথায় আমার হত স্থান।

বারো টাকা, অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
যখন ঘনায় রাত্রি পাথুরে শহরে
যখন ছড়ায় দীর্ঘশ্বাস আকাশ অধরে,
ঠিক তক্ষুনি সস্তার মেকাপেতে মুখ ঢেকে
লাজ লজ্জার সংস্কারকে পিছে রেখে;
এই সাধারণ মেয়েটাই শহরে-
বিলোতে প্রেম রাস্তায় এসে দাঁড়ায়,
প্রেমহীন শহরের কদর্য লোকগুলো
তার কাছে প্রেম চেয়ে দু’হাত বাড়ায়।
ঠিক তক্ষুনি, মন্দির মসজিদ গীর্জায়
শুরু হয় পূজো-আরাধনা,
বিশ্বপ্রেমের পাঠে শিক্ষিত হয় লোক,
আঁকে প্রেমের আল্পনা;
সব পাপ দিয়ে আসে মানুষ দেবস্থানে
দেবতারা হাসে তুলে মাথা
মাঝ রাত্তির হলে ফিরে যায় সেই মেয়ে
ঘরে রোজগার বারো টাকা।
সারা গায়ে কালশিটে, ও খিদের মাশুল
জীবন তরণী বায় স্রোত প্রতিকূল,
মুখ চেয়ে সন্ততি- হাঁড়ি চড়েনা;
বেজন্মা গালা গালে পেট ভরেনা।
ঠিক তক্ষুনি এনে দিলো-
এক রাশ সুবাতাস সেই রোজগার বারো টাকা
নেভাতে পেটের জ্বালা অবতার হয়ে এলো
সেই রোজগার বারো টাকা
ঠিক তক্ষুনি গোনা হয়-প্রণামীর থালা,
লাভের ভাঁড়ার হয় পূর্ণ;
দেবতাকে দিয়ে ঘুষ
জমা রেখে সব পাপ
মানুষ বাড়ায় তার পূণ্য !
সেই মেয়ে ভোর হলে শত বিদ্রুপ সয়
দেবতারা দেখে তুলে মাথা ;
সত্যি বিলোয় প্রেম সেই মেয়ে নিঃসারে
প্রণামী মাত্র বারো টাকা!
নীলাঞ্জনা ii (হয়ত কারোর বুকে মাথা রেখে) , অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
হয়ত কারোর বুকে মাথা রেখে,
দীর্ঘশ্বাস হাসি দিয়ে ঢেকে,
নিরাপত্তার উষ্ণতা দিয়ে-
ঢাকবে যন্ত্রণা, নীলাঞ্জনা।
স্বামী-সন্তান, ফ্ল্যাট আর গাড়ি;
সুখের অসুখ আজ মহামারী।
চেনা চেনা গান, চেনা অভিমান,
চেনা বিছানায় জুড়ি সম্মান,
পুরনো স্বপ্ন শত পাখি হয়ে –
সুদূরে দিয়েছে পাড়ি।
লাগে মাসকারা দু’চোখ আঁকতে
ক্লান্তির কালো রঙকে ঢাকতে
রাতের চাদরে মুখ ঢেকে খোঁজো
কিসের সান্ত্বনা ?
স্বাধীনতা, অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
এক মুঠো স্বপ্নের নাম স্বাধীনতা,
প্রত্যাশা পূরণের নাম স্বাধীনতা
আমাদের রক্তের দাম স্বাধীনতা,
লড়াই অন্তে পরিণাম স্বাধীনতা
আমাদের পোড়া দেশে স্বাধীনতা মানে হলো,
রাশিরাশি ব্যর্থতা আর শূন্যতা।
উর্বর জমি তবু হায় স্বাধীনতা
কৃষকের বাঁচবার নেই স্বাধীনতা
দিগন্ত বিস্তৃত সোনারঙা ধানে
দেশেতে অবাধ মৃত্যুর স্বাধীনতা
বহু স্লোগানের ঢাক,
ঢাকে মাছ দিয়ে শাক
তবুও দেশেতে শ্মশাণের স্তব্ধতা…
পাঁচশালা ব্যবস্থা তবু স্বাধীনতা
লুটেপুটে খায় সব শালা স্বাধীনতা
হাজার প্রাণের দামে এলো স্বাধীনতা
তাদের জন্যে দু’মিনিট নীরবতা!
এরপর চুরি-ঘুষ, আবার আবার চুরি
প্রগতি শৈশবেই দিচ্ছে হামাগুড়ি
একটি ছুটির দিন তুমি স্বাধীনতা।

রোজ ঘুম থেকে ওঠা, অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
রোজ ঘুম থেকে ওঠা আর দাঁত মাজা,
খবর কাগজে দু:সংবাদ খোঁজা।
দারুণ ব্যস্ততায় স্নান-খাওয়া সারা হয়,
জীবনে আরেকদিন আবার বাড়তি হয়।
আবার রাত্রি হবে তাইতো সকাল হয়
আশাকে পণ্য করে তবুও ব্যবসা হয়
তবুও তো নিশি রাতে শহর বাঈজী সাজে,
ধর্মতলার মোড়ে অধর্ম গান গায়।
বাসে তে আর ট্রামে, গরমে আর ঘামে,
ঘৃণা অসন্তোষ বেচাকেনা কম দামে
তবুও নন্দনে দৃষ্টি নন্দনে
প্রয়াসে মতে শত বরাহ নন্দনে।
রাজবাড়ী অবরোধে হাজারটা প্রাণ যায়
নেতারা মন্ত্রী হতে মানুষের বলি চায়
তবুও আকাশতলে মানুষ মিছিলে চলে
নেতাদের খ্যাতিটাই সবার কন্যাদায়।
স্বপ্ন সাদা কালো,
মন্দ আর ভালো
দ্বন্দ্ব সন্ধানে মোমবাতি জ্বালো
গৃহিণী পাশে শুয়ে, একে একে দুইয়ে !
ঘাড়েতে পাউডার হালকা ভাবে ছুঁয়ে।
বয়ে চলে জীবনের এক সুর-এক ধারা
কবিতার বইয়ে শুধু রাত্রির কড়া নাড়া –
জীবন অর্থহীন, শোন হে অর্বাচীন বলে-
দূষণেতে ভরা মন্দ দখিনা বায়।
আমাদের তো কিচ্ছুই নেই ! , অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
(আমাদের তো কিচ্ছুই নেই আমাদের সন্তুষ্টি একটুতেই!)
স্বপ্ন দেখি পাশাপাশি
ওভারটাইমে ভালবাসি !
(আহ্বান তাই সব্বাইকে!)
জীবন যে গেছে সামনে থমকে
শেষ সম্বল বাঁচাও প্রেমকে।
যদি বাঁচতে চাও,
দুনিয়ার প্রেমিক এক হও।
প্রেমিকের ঠাঁই নেই রাজপথে,
গলির অন্ধকারে কোনোমতে,
লুকিয়ে বাবার চোখ, শত বার গিলে ঢোক;
দু’তিন পা পথ চলা, গুটি কয়েক কথা বলা,
সিগারেট খেয়ে ভোলা বিচ্ছেদ শোক।
(উৎকন্ঠায় মাখা প্রেমের দু’চার ক্ষণ –
বিছানায় শুয়ে শুয়ে রোমন্থন,)
যদি করতে না চাও-
দুনিয়ার প্রেমিক এক হও।
যদি যাও ময়দানে রয়েছে পুলিশ !
টাকা যদি পকেটে তে থাকে ভাগ্যিস-
রক্ষে তবেই পাবে; বাঁচবেনা কোনভাবে-
প্রেমিকের ঠাঁই হবে হাজত ঘরে
চোর, খুনি, ডাকাতেরা বুক চিতিয়েই ঘোরে
প্রেমিকেরা মুখ ঢাকে চোরের মতন
খুনি হয় দেশনেতা, দেশপ্রেম বিক্রেতা,
প্রেমিকেরা সাজা পায় খুনির মতন।
( প্রেমের নিরাপত্তা রক্ষার্থে, প্রেমহীন আজকের পৃথিবীর স্বার্থে)
সংবিধানেতে প্রস্তাব নিয়ে যাও।

কালো মেয়ে, অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
এই মেয়ে !
তোর খ্যাঁদা নাক, কালো রঙ,
সব্বাই বলে সঙ,
আসল অন্তরায়- বাবার পকেট ফুটো,
তনুবতী না রূপবতীও না
তুইতো মুক্ত আসলে ঝুটো !
এই মেয়ে,
বিয়েতো হবেনা, কথাও কবে না
আইবুড়ী বলে শুধু দূর দূর ছাই ছাই!
আসলে দিলে পণ দেবেরে তনু-মন
তোকেই সুন্দরী বলবে সব শালায়।
সোনা চাই, দানা চাই, পুরোবালী খানা চাই
ফ্রিজ টিভি গাড়ী বাড়ী চাই চাই চাই
তুইতো উপরি যেন পণ্যের ক্যাশ মেমো !
কেউ বলবে না “শুধু তোমাকে, তোমাকে চাই”
রাত জেগে জেগে শুধু আয়নায় মুখ দেখা
হাজার লোকের ভীড়ে তবুও তবুও একা;
লাজে তোর হেঁট মাথা, সমাজের যারা মাথা-
তাদেরইতো লজ্জার নেইকো বালাই।

নীলাঞ্জনা iii (দুলছে হাওয়ায়) , অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
দুলছে হাওয়ায়, না না না ফুল নয় !
দখিনা বাতাসে এ নাগপাশে সময় নয়।
খোলা বারান্দায়, এই নির্জনতায়
সিলিংয়ের বন্ধনে, মাটির ব্যবধানে
দুলছে স্খলিত বসনা
নীলাঞ্জনা ।।
প্রেমিকের স্পর্শ আনবেনা শিহরণ আর ঐ মনে,
‘কেয়ার অফ: ফুটপাথ, নচিকেতা, দুটি হাত-
শূন্যে ছুড়বে ফাঁকা আস্ফালনে,
উড়ছে মাছি, না না না অবুঝ নয়
সে আজো একা তাই ঘিরে মাছিরাই রয়..
লাশকাটা ঘরে যদি চেরা হয় তার বুক সঙ্গোপনে,
দেখবে সেখানে রাখা বিবর্ণ একমুঠো স্বপ্ন যতনে !
যে স্বপ্ন কোন কিশোরের দেয়া উপহার গানের ভাষায়,
যে স্বপ্ন প্রথাগত মিথ্যে কপট সংসারের আশায়।
এখন সময়,না না না রাত্রি নয় !
সে আজ জীবনরাত্রি পেরিয়ে গেছে হায় ।

এই তো জীবন, অ্যালবাম: কে যায় ! (১৯৯৪)
এই জীবন আছে বল কতক্ষণ ?
জীবনের বাজি ধরা,
কভু জেতা কভু হারা।
আজ আমি নচিকেতা
কুলীন সঙ্গীত বিক্রেতা,
কাল হরিজন।
এই তো জীবন !
আসলে আরেক ঢেউ,
দেখবেনা ফিরে কেউ
বলবে গাইত গান –
এখন সে স্মৃতি ম্লান,
‘এই বেশ ভালো আছি’ বলত তখন।
আবার না ভোর হতে,
বাজারের থলি হাতে –
মধ্যবিত্ত হয়ে জীবন যাপন;
চাইবেনা কেউ সই,
বলবে অবশ্যই,
আজকের গাওয়া গান পুরনো তখন।
ডাকবে না আর কেউ-
আর কোনো জলসায়,
উত্তেজনায় ঘেরা আর কোনো সন্ধ্যায়,
নেবেনা অনুষ্ঠানে কেউ উদ্যোগ।
যদি আসে সেই দিন,
সব্বাই জেনে নিন,
থাকবে না কোনো অভিযোগ।

No comments:

Post a Comment